বিশ্বব্যাপী স্কুল-বয়সী শিশুদের দুই-তৃতীয়াংশের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই, নতুন প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউনিসেফ-আইটিইউ
শিশু এবং তরুণদের অনলাইনে মানসম্পন্ন ডিজিটাল শিক্ষা গ্রহণ এবং অনলাইনে বিদ্যমান বিভিন্ন সুযোগ কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে বর্তমানে ডিজিটাল বিভাজন যে বাধা তৈরি করেছে তা দূর করতে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন এবং ইউনিসেফ জরুরি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে

- পাওয়া যাবে:
- বাংলা
- English
নিউইয়র্ক/জেনেভা/ঢাকা, ১ ডিসেম্বর ২০২০ – ইউনিসেফ এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) নতুন এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী স্কুল-বয়সী শিশুদের দুই-তৃতীয়াংশ বা ৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী ১৩০ কোটি শিশুর বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ নেই।
‘কত সংখ্যক শিশু ও তরুণের ঘরে ইন্টারনেট সুবিধা আছে?’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী স্কুল-বয়সী শিশুদের দুই-তৃতীয়াংশের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই। একই অবস্থা ১৫-২৪ বছর বয়সী তরুণদেরও। তরুণ জনগোষ্ঠীর ৬৩ শতাংশ বা ৭৫ কোটি ৯০ লাখ তরুণ-তরুণীর ঘরে ইন্টারনেট সংযোগ নেই।
২০১৯ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর করা মাল্টি ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৬২ শতাংশ পরিবারের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই। একইসঙ্গে এটি একটি জাতীয় গড় এবং পরিবারের আর্থ-সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশ পরিবারের মাত্র ৮ দশমিক ৭ শতাংশের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে, যেখানে সবচেয়ে ধনী ২০ শতাংশ পরিবারের ক্ষেত্রে এই হার ৭৫ দশমিক ৩ শতাংশ। দূরশিক্ষণের আরেকটি প্রধান মাধ্যম টেলিভিশনের বেলায়, জাতীয়ভাবে ৫১ শতাংশ পরিবার টেলিভিশনের মালিক। একইসঙ্গে, সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশ পরিবারের মাত্র ৪ দশমিক ৮ শতাংশ টেলিভিশনের মালিক, যেখানে সবচেয়ে ধনী ২০ শতাংশ পরিবারের মাঝে এই হার ৯০ দশমিক ২ শতাংশ।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি টোমো হোযুমি বলেন, “দূরশিক্ষণের এই মাধ্যমগুলো ব্যবহারের সুযোগ না পাওয়া শিশুরা ডিজিটাল বিভাজন ও বৈষম্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মহামারি চলাকালীন তারা শিক্ষা গ্রহণের কম সুযোগ পেয়েছে, যা তাদের শিক্ষাজীবন এবং ভবিষ্যৎকে এলোমেলো করে দিয়েছে। এই বিভাজন আগে থেকে বিদ্যমান বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি দারিদ্র্য ও বৈষম্যের দুষ্ট চক্রকে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দিতে পারে, যেখানে শিশুরা পরিণত হচ্ছে এর বাহকে।”
কোভিড-১৯ এর কারণে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে প্রায় ৪ কোটি ২০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইন্টারনেট ও টেলিভিশন ছাড়া শিক্ষা কার্যক্রম কার্যকরভাবে এই শিশুদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এমনকি মহামারির আগেও একবিংশ শতাব্দীর অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকার জন্য তরুণ জনগোষ্ঠীর একটি ক্রমবর্ধমান অংশের ভিত্তিগত, স্থানান্তরযোগ্য, ডিজিটাল, চাকরি-কেন্দ্রিক এবং উদ্যোগী দক্ষতা শেখার প্রয়োজন হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ডিজিটাল বিভাজন বৈষম্যকে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দিচ্ছে, যা ইতোমধ্যে দেশ ও কমিউনিটিগুলোকে বিভক্ত করে ফেলেছে। দরিদ্রতম পরিবার, গ্রামাঞ্চল ও স্বল্প আয়ের পরিবারের শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠী তাদের সমবয়সী বা সহপাঠীদের চেয়ে আরও পিছিয়ে পড়ছে এবং পুনরায় সহপাঠীদের সঙ্গে একই কাতারে পৌঁছানোর সুযোগও তাদের খুব কম।
বিশ্বব্যাপী, সবচেয়ে ধনী পরিবারের স্কুল-বয়সী শিশুদের মধ্যে ৫৮ শতাংশের বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, যেখানে সবেচেয়ে দরিদ্র পরিবারের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ১৬ শতাংশ। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আয়ের ভিত্তিতে একই ধরনের বৈষম্য বিদ্যমান। নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে স্কুল-বয়সী প্রতি ২০ জন শিশুর মধ্যে একজনেরও কম শিশুর বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, যেখানে উচ্চ-আয়ের দেশগুলোতে প্রতি ১০ জন শিশুর ৯ জনের বাড়িতেই ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে।
দেশ এবং অঞ্চল জুড়ে ভৌগোলিক বৈষম্যও রয়েছে। বিশ্বব্যাপী, শহরাঞ্চলে স্কুল-বয়সী শিশুদের প্রায় ৬০ শতাংশের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই, যেখানে গ্রামে থাকা পরিবারগুলোর স্কুল-বয়সী শিশুদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ এ সুবিধা পায় না। সাব-সাহারা আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার স্কুল-বয়সী শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, যেখানে প্রতি ১০ জন শিশুর মধ্যে প্রায় ৯ জনই ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে।
অঞ্চল |
বাড়িতে ইন্টারনেট না থাকা ৩-১৭ বছরের স্কুল-বয়সী শিশুর সংখ্যা |
পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকা |
৯৫% - ১৯ কোটি ৪০ লাখ |
পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকা |
৮৮% - ১৯ কোটি ১০ লাখ |
দক্ষিণ এশিয়া |
৮৮% - ৪৪ কোটি ৯০ লাখ |
মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা |
৭৫% - ৮ কোটি ৯০ লাখ |
লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল |
৪৯% - ৭ কোটি ৪০ লাখ |
পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া |
৪২% - ৩ কোটি ৬০ লাখ |
পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল |
৩২% - ১৮ কোটি ৩০ লাখ |
বিশ্বব্যাপী |
৬৭% - ১৩০ কোটি |
গত বছর ইউনিসেফ ও আইটিইউ প্রতিটি স্কুল ও তার আশেপাশের কমিউনিটিকে ইন্টারনেটে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে বৈশ্বিক উদ্যোগ 'গিগা' চালু করে। সরকারগুলোর সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে 'গিগা' এরইমধ্যে ৩০টি দেশে ৮ লাখেরও বেশি স্কুলের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এই তথ্য নিয়ে 'গিগা' ডিজিটাল শিক্ষা সমাধান এবং অন্যান্য সেবাসমূহ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সংযোগের অবকাঠামো তৈরিতে সরকারি-বেসরকারি মিশ্রিত বিনিয়োগের জন্য বাধ্যতামূলক বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরির লক্ষ্যে সরকার, শিল্প খাত, বেসামরিক খাত এবং ব্যক্তিগত খাতের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে।
এই উদ্যোগ এখন 'জেনারেশন আনলিমিটেডের' সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে 'রিইমাজিন এডুকেশন' উদ্যোগের অধীনে চলছে। 'রিইমাজিন এডুকেশন' উদ্যোগের মাধ্যমে ইউনিসেফের লক্ষ্য হচ্ছে- শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠীকে মানসম্পন্ন ডিজিটাল শিক্ষা গ্রহণের সমান সুযোগ প্রদান করে শিক্ষার সংকট মোকাবিলা করা এবং শিক্ষাকে রূপান্তর করা। আর এটি অর্জনের মূল চাবিকাঠি হলো সর্বজনীন ইন্টারনেট সংযোগ।
এই প্রচেষ্টার ওপর ভিত্তি করে এবং তরুণ জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে তাদের ডিজিটাল দুনিয়ায় সম্পৃক্ত ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তরুণদের সক্ষমতা তৈরির লক্ষ্যে 'জেনারেশন কানেক্ট' নামে একটি উদ্যোগ চালু করেছে আইটিইউ।
ইউনিসেফ-আইটিইউর প্রতিবেদনে উল্লেখিত সংখ্যাগুলো উদ্বেগজনক চিত্রই তুলে ধরে এবং সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা এবং নিম্ন পর্যায়ের ডিজিটাল দক্ষতার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে । আইটিইউর সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, নিম্ন পর্যায়ের ডিজিটাল দক্ষতা ডিজিটাল সমাজে অর্থবহ অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। এর পাশাপাশি যেখানে ক্রয়ক্ষমতায় ব্যাপক বৈষম্যের কারণে উন্নয়নশীল বিশ্বের অনেকের কাছে মোবাইল টেলিফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার বেশ ব্যয়বহুল হিসেবেই রয়ে গেছে।
এমনকি শিশুদের ঘরে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেও তারা গৃহস্থালি কাজ বা ঘরের নানা কাজের চাপের কারণে, পরিবারে পর্যাপ্ত ডিভাইস না থাকার কারণে, মেয়েদের ক্ষেত্রে কম বা একেবারেই ইন্টারনেট ব্যবহারের অনুমতি না থাকার কারণে অথবা অনলাইনে সুযোগগুলো কীভাবে কাজে লাগাতে হয় সে সম্পর্কি সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে তারা ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পায় না। এ ছাড়া অনলাইনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ও রয়েছে, কেননা সন্তানদের অনলাইনে নিরাপদ রাখতে বাবা-মায়েদের যথাযথ প্রস্তুতি নাও থাকতে পারে।
###
সম্পাদকদের জন্য নোট:
৮৫টিরও বেশি দেশের তথ্য নিয়ে তৈরি করা এই প্রতিবেদনে ০-২৫ বছর বয়সী শিশু এবং তরুণ রয়েছে এমন পরিবারগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগের প্রাপ্যতা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্লেষণ ব্যবহার করা হয়েছে।
মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট ডাউনলোড করুন এখান থেকে।
ছবি ডাউনলোড করা যাবে এখান থেকে।
আইটিইউ সম্পর্কিত
ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা, যা ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে একত্রে আইসিটির ক্ষেত্রে উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং ৯০০টিরও বেশি সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার সদস্য। ১৫০ বছরেরও বেশি আগে ১৮৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত আইটিইউ হলো রেডিও তরঙ্গের বৈশ্বিক অংশীদারি ব্যবহার, স্যাটেলাইট কক্ষপথ নির্ধারণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রদান, উন্নয়নশীল বিশ্বে যোগাযোগের অবকাঠামো উন্নত করা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি বিস্তৃত আন্তঃসংযোগ গড়ে তুলতে বৈশ্বিক মান প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে সমন্বয় করতে দায়বদ্ধ একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা। ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক থেকে শুরু করে সর্বাধুনিক ওয়্যারলেস প্রযুক্তি, অ্যারোনটিকাল এবং মেরিটাইম নেভিগেশন, রেডিও অ্যাস্ট্রোনমি, সমুদ্রসংক্রান্ত এবং উপগ্রহভিত্তিক পৃথিবী পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি ফিক্সড-মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ও ব্রডকাস্টিং প্রযুক্তি, রূপান্তরে আইটিইউ বিশ্বকে সংযুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আরও তথ্যের জন্য ভিজিট করুন: www.itu.int.
জেনারেশন আনলিমিটেড সম্পর্কিত
জেনারেশন আনলিমিটেড (জিইএনইউ) হচ্ছে ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য নজিরবিহীন মাত্রায় শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণের জন্য জরুরি প্রয়োজন মেটাতে একটি বৈশ্বিক বহু-পক্ষীয় অংশীদারিত্ব। ভিজিট করুন: www.generationunlimited.org
গিগা সম্পর্কিত
আইটিইউ ও ইউনিসেফ কর্তৃক ২০১৯ সালে চালু হওয়া ‘গিগা’ প্রতিটি স্কুলকে ইন্টারনেট এবং তরুণ জনগোষ্ঠীর প্রতিটি সদস্যকে তথ্য, সুযোগ ও পছন্দের সঙ্গে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। এর লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিটি শিশু তাদের প্রয়োজনীয় ডিজিটাল পাবলিক পণ্য দিয়ে সজ্জিত এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ পছন্দ অনুযায়ী সাজাতে ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। আরও তথ্যের জন্য ভিজিট করুন: www.gigaconnect.org.
গণমাধ্যম বিষয়ক যোগাযোগ
ইউনিসেফ সম্পর্কে
প্রতিটি শিশুর অধিকার ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বিশ্বের ১৯০ টি দেশে কাজ করছে ইউনিসেফ। সকল বঞ্চিত শিশুদের পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়ে আমরা কাজ করি বিশ্বের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে।
আমাদের কাজ সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন: www.unicef.org.bd
ইউনিসেফের সাথে থাকুন: ফেসবুক এবং টুইটার