নতুন আশা: রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশী তরুন-তরুনীদের সহাবস্থান এবং দক্ষতা নিশ্চিত করা
রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরীরা কম্পিউটার সাক্ষরতার ক্লাস ও শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত কর্মশালায় অংশ নিতে পারে এবং জীবন দক্ষতার সুযোগ গ্রহণ করতে পারে এমন কাঙ্খিত স্থান সরবরাহের ক্ষেত্রে সামাজিক কেন্দ্রগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

- পাওয়া যাবে:
- বাংলা
- English
কক্সবাজারে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম আশ্রয়শিবিরে ৮ লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি শরণার্থীর বাস। আশ্রয়শিবিরে বসবাসরত লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়দানকারী বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করা প্রয়োজন।। শরণার্থী এবং আশ্রয়দানকারী উভয় সম্প্রদায়ের জনগণের সুস্থতা নিশ্চিত করতে জীবন রক্ষাকারী স্বাস্থ্য সেবা, মনোসামাজিক সহায়তা, শিক্ষা ও পুষ্টি সহায়তা প্রদানের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও অহিংস পরিবেশ জরুরি।
বাংলাদেশের দরিদ্রতম জেলাগুলোর মধ্যে কক্সবাজার একটি। কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলোতে শরণার্থী কিশোর-কিশোরীরা প্রায় অবরূদ্ধ অবস্থায় বসবাস করছে। একই কারনে স্থানীয় কমিউনিটির কিশোর-কিশোরীরা একই ধরনের ঝুঁকিতে পড়ছে এবং সেই সাথে তারা ঝুঁকি মোকাবেলার নেতিবাচক প্রক্রিয়ার সন্মুখিন হচ্ছে। তবে অগ্রগতি সত্ত্বেও, জরুরি শিশু সুরক্ষা সম্পর্কিত উদ্বেগের ক্ষেত্রে আশ্রয়শিবির এবং স্থানীয় কমিউনিটির শিশু এবং তরুণ-তরুণীরা অব্যাহত হুমকির মধ্যে রয়েছে। এসব হুমকির মধ্যে রয়েছে শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ, নির্যাতন, অবহেলা, শোষণ এবং শিশু পাচার।
আশ্রয় শিবিরগুলোতে কর্মসংস্থানের অভাব, শিক্ষার অভাব, স্বল্প মজুরি এবং টেকসই সমাধানের অভাব পাচারের ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। কক্সবাজারে বসবাসরত বাংলাদেশী স্বাগতিক কমিউনিটির লোকজন যেসব আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে সেসব স্থানীয় কমিউনিটির কিশোর-কিশোরীদের জন্যও বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনছে।
এসব অনিশ্চয়তা উভয় কমিউনিটির কিশোর-কিশোরীদের হতাশাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
শিক্ষাখাতের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায় যে, এসব হতাশা অনেকটাই ন্যায়সঙ্গত। কারন, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রায় ৮০ শতাংশ রোহিঙ্গা কিশোর-কিশোরীর লেখাপড়া বা প্রশিক্ষণের সুযোগ ছিল না।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ইনস্ট্রুমেন্ট কান্ট্রিবিউটিং টু স্টেবিলিটি এন্ড পিস (আইসিএসপি) সামাজিক কেন্দ্রগুলো বহুল প্রতীক্ষিত ভৌত স্থান প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এসব স্থানে রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশী কিশোর-কিশোরীরা কম্পিউটার সাক্ষরতার ক্লাস এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত কর্মশালায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে একদিকে যেমন জীবন দক্ষতা অর্জন করতে পারে, পাশাপাশি নিজেরা একে অন্যের সাথে যোগাযোগও করতে পারে।
২০১৯ সালে পাঁচটি কেন্দ্র খোলার আগে, উভয় কমিউনিটির কিশোর-কিশোরীদের প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট কয়েকটি কার্যক্রম চালু ছিল।
কেন্দ্রগুলো বর্তমানে উভয় কমিউনিটির ৪,১২৫ জন (ছেলে ২,৮৭৫ জন, মেয়ে ১,২৫০ জন) কিশোর-কিশোরীর নেতিবাচকভাবে সবকিছু মেনে নেয়ার প্রক্রিয়ার একটি বিকল্প প্রক্রিয়া সরবরাহ করছে। করোনাভাইরাস জনিত লকডাউন শুরুর আগে এই কাহিনীগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল। তরুণদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করা এবং জীবন দক্ষতা অর্জনের একটি ফোরাম হিসাবে কেন্দ্রগুলো কীভাবে কাজ করে এই কাহিনীগুলো সুস্পষ্টভাবে সে বিষয়গুলোই তুলে ধরে।
স্থিতিশীলতা এবং শান্তিতে সহায়তাকারী ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইন্সট্রুমেন্টের (আইসিএসপি) সহযোগিতায় ইউনিসেফের এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বাড়ানো, এবং রোহিঙ্গা ও স্বাগতিক বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক সংহতি শক্তিশালী করা ও নিজেদের মধ্যে ব্যবধানকে কমিয়ে আনা। প্রকল্পের ডিজিটাল ব্রোশিওর (digital brochure) এবং পোস্টার (poster) এখানে ডাউনলোড করতে পারেন।
এই প্রকাশনাটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় করা হয়েছিল। এই প্রকাশনাটির বিষয়বস্তুর সম্পূর্ণ দাবীদার ইউনিসেফ এবং এখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতামত প্রতিফলিত হয় না।