ম্যান্ডেট
প্রতিটি শিশুর অধিকার রক্ষায় কাজ করে ইউনিসেফ

- পাওয়া যাবে:
- বাংলা
- English
শিশুদের জন্য সংস্থা
প্রতিটি শিশুর অধিকার রক্ষায় ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করে আসছে ইউনিসেফ।
জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে আমাদের ম্যান্ডেট বা কার্যবিধি বিধৃত হয়েছে। এই চুক্তিতে ‘শিশুর’ আইনি সংজ্ঞা এবং আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় তাদের অধিকারসমূহ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত হয়েছে।
ইউনিসেফই একমাত্র সংস্থা, যার কথা সনদে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ইউনিসেফকে বিশেষজ্ঞ সহায়তা ও পরামর্শের উৎস হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
শিশু সনদ ১৯৯০ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাস হয়। সব মানবাধিকার চুক্তির মধ্যে এটাই সবচেয়ে সর্বজনযোগ্যভাবে ও দ্রুততম সময়ে গৃহীত হয়। বাংলাদেশ ১৯৯০ সালে এই সনদে স্বাক্ষর এবং তা অনুসমর্থন করে।
৫৪টি পরিচ্ছেদে সাজানো সনদটিতে স্বাক্ষর করা প্রতিটি দেশ বর্ণ, ধর্ম ও সামর্থ্য নির্বিশেষে সব শিশুর অধিকার রক্ষার এর যে দর্শন, সেটা বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় বাধ্য।
ইউনিসেফ ১৯০ দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে। তাদের এই বৈশ্বিক উপস্থিতির মধ্য দিয়ে একেবারে প্রত্যন্ত এলাকায়ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কাছে অনন্য সেবা নিয়ে যায় সংস্থাটি।
অন্যান্য দায়িত্বের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সরকারকে শিশু অধিকার সনদ এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ঐচ্ছিক প্রটোকলে স্বাক্ষর, অনুসমর্থন ও তা বাস্তবায়নে উৎসাহিত ও সহযোগিতা করে ইউনিসেফ।
বৈশ্বিক লক্ষ্য
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে (এসডিজি) ১৭টি সার্বজনীন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোর জন্য। ২০১৫ সালে এতে স্বাক্ষর করা ১৯৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।
রাজনৈতিক, পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক- ক্ষেত্রে এসব চ্যালেঞ্জের সমাধান বের করার মাধ্যমে দেশগুলোকে ২০৩০ সালের আগে এসডিজির লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে হবে।
এ সব দেশের সম্পদের পরিমাণে পার্থক্য থাকতে পারে। তবে এসডিজির মাধ্যমে একই সুরক্ষা ব্যবস্থা ও জীবনযাপনের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সমতা নিশ্চিত করা যেতে পারে।
সে অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে, যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও লৈঙ্গিক সমতার পাশাপাশি নিরাপদ পানি এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০১৬-২০২০ সাল মেয়াদি এ পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই প্রবৃদ্ধি যেন অন্তর্ভুক্তিমূলক, দরিদ্রবান্ধব হয় এবং পরিবেশবান্ধব ও শিল্পকেন্দ্রিক অর্থনীতি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) পূরণের পর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের দৌড়ে শামিল হয়েছে বাংলাদেশ। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রচেষ্টার এমডিজির ধারাবাহিকতায় এসেছে এসডিজি।
এসডিজির ৭টি লক্ষ্য পূরণ করতে পারলে প্রত্যেকেই সুবিধাপ্রাপ্ত হবে। এসব লক্ষ্যে শিশুর উন্নয়নের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে।
লক্ষ্য ১: দারিদ্য নির্মূল
১.২. দরিদ্র নারী, পুরুষ ও শিশুদের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা।
লক্ষ্য ২: ক্ষুধার অবসান
২.১. ক্ষুধামুক্তি এবং শিশুসহ সব মানুষের নিরাপদ, পুষ্টিকর ও পর্যাপ্ত খাদ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা।
২.২. পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের খর্বকায়ত্ব ও রুগ্নতা রোধসহ ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের অপুষ্টি নির্মূল।
লক্ষ্য ৩: সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ
সদ্যোজাত এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী সব শিশুকে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু থেকে রক্ষা করা।
লক্ষ্য ৪: মানসম্মত শিক্ষা
৪.১. সব ছেলে-মেয়ে যেন বিনামূল্যে, সমমানের ও মানসম্মত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করে, যে শিক্ষা তাদের উপযুক্ত করে তুলবে, ত নিশ্চিত করা।
৪.২. সব ছেলে-মেয়ের শৈশব থেকেই মানবিক বিকাশ, যত্ন এবং প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা যাতে তারা প্রাথমিক শিক্ষার জন্য প্রস্তুত হয়।
লক্ষ্য ৫: লৈঙ্গিক সমতা
৫.১. সব জায়গায় সব স্তরের নারী ও মেয়েদের প্রতি বৈষম্যের অবসান ঘটানো।
৫.২. সব নারী ও মেয়েদের প্রতি সব ধরনের সহিংসতা দূর করা।
৫.৩. সব ধরনের ক্ষতিকর চর্চা, যেমন বাল্য বিয়ে, জোর করে বিয়ে দেয়া এবং মেয়েদের জেনিটল মিউটিলেশনের মতো কাজ দূর করা।
লক্ষ্য ৮: পরিচ্ছন্ন পেশা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
৮.৭. জোরপূর্বক শ্রম বন্ধ করতে তাৎক্ষণিক ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, আধুনিক দাসত্ব ও মানব পাচার বন্ধ এবং যুদ্ধে শিশুদের ব্যবহারসহ সবচেয়ে বিপজ্জনক শ্রমে শিশু নিয়োগের অবসান ঘটানো। ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশু শ্রম নির্মূল করা।
লক্ষ্য ১৬: শান্তি, ন্যায়বিচার ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান
১৬.২. শিশুদের হয়রানি, শোষণ, পাচার এবং যে কোনও ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের অবসান।