ইউনিসেফের সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করলেন জাপানের ফুটবল তারকা মাকোতো হাসেবে

- পাওয়া যাবে:
- বাংলা
- English
৭ জুন ২০১৯: গত ৫ ও ৬ জুন ঈদুল ফিতর উদযাপনের সময় আন্তর্জাতিক ফুটবলার এবং ইউনিসেফ জাপানের শুভেচ্ছা দূত মাকোতা হাসেবে আকস্মিক সফরে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন। সে সময় শরণার্থীরা ছিলেন উত্সবের আমেজে এবং জাপানি ফুটবল তারকাকে তারা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। ইউনিসেফের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং রোহিঙ্গা শিশুদের অধিকার ও কল্যাণের বিষয়গুলো তুলে ধরতেই বাংলাদেশ ভ্রমণ করেন হাসেবে।
এইনট্রাক্ট ফ্রাঙ্কফুর্টের এই তারকা ফুটবলার বলেন, “বছরের এই বিশেষ সময়ে এখানে আসা এবং এই উচ্ছল ও প্রাণবন্ত শিশুদের সঙ্গে দেখা করাটা আমার জন্য অনেক সম্মানের। শরণার্থী শিবিরগুলোতে ৫ লাখেরও বেশি শিশু বসবাস করছে, যাদের প্রত্যেকের নিজস্ব প্রত্যাশা ও স্বপ্ন রয়েছে। বিশ্ব কোনো অবস্থাতেই তাদের ভুলে যেতে পারে না। দুই বছর হলো তারা মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে পালিয়ে এসেছে এবং এই শিশুদের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমাদের টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
জাপানি এই ফুটবলার ছোট রোহিঙ্গা ছেলেদের সঙ্গে একটি ফুটবল ম্যাচ খেলার সময় বৃষ্টি শুরু হলে তা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। কর্দমাক্ত পরিবেশে ও বেশ পিচ্ছিল মাঠে অনুষ্ঠিত ফুটবল ম্যাচটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের অবসর কাটানোর ভালো উপায় ছিল।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি তোমু হোজুমি বলেন, “কমিউনিটিগুলোকে এক ছাতার নিচে আনার ক্ষেত্রে ফুটবল অসাধারণ একটি উপকরণ। আপনি কোথা থেকে এসেছেন বা আপনি কোন দেশের পতাকা বহন করেন— সেটা কোনো বিষয়ই নয়। ফুটবল পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তের মানুষকে একত্রিত করে। হাসেবেকে আতিথেয়তা দিতে পেরে ইউনিসেফ সম্মানিত বোধ করছে।“
তিনি বলেন, “তার মূল্যবান সময় দেওয়ায় এবং শিশুদের সঙ্গে নিঃসঙ্কোচে তার দক্ষতা ভাগাভাগি করায় আমরা তার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। তিনি খুবই প্রাণোচ্ছ্বল এবং রোহিঙ্গা শিশুদের অভিজ্ঞতা ও মিয়ানমারে তাদের প্রথাগত খেলাধুলা সম্পর্কে জানার জন্য তিনি খুবই আগ্রহী ছিলেন।“
ফুটবলার হাসেবে তার সফরের সময় ইউনিসেফের সহায়তাপ্রাপ্ত একটি কেন্দ্রে সময় কাটান, যেখানে তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুরা সার্বক্ষণিক সেবা পায়। সেখানে শিশুদের পুরোপুরি সুস্থ করে তুলতে তাদের পরিচর্যায় ব্যস্ত মায়েদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। তিনি এক নারীর সঙ্গে কথা বলেন যিনি তার মৃত বোনের বাচ্চার পরিচর্যা করছিলেন। শিশুটির মা মারা যাওয়ায় সে মায়ের বুকের দুধ থেকে বঞ্চিত। তাই শিশুটি যাতে সর্বোত্তম পুষ্টি পায় তা নিশ্চিত করার জন্য কীভাবে একজন ‘ওয়েট নার্স’ (যে নারী অন্যের শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ায় ও পরিচর্যা করে) হওয়া যায় তা ওই নারী শিখছিলেন।
ইউনিসেফের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কক্সবাজারে অবস্থানরত ১২ লাখ মানুষকে লক্ষ্য করে, যাদের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। এদের মধ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং সেখানকার স্থানীয় বাংলাদেশি জনগোষ্ঠী— উভয়ই রয়েছে। এই শরণার্থী সংকটের শুরু থেকেই জাপান সরকার ইউনিসেফের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে ভূমিকা রাখছে এবং জরুরি প্রয়োজন মেটাতে ২ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে। জীবনরক্ষামূলক এই জরুরি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য আরও জরুরি তহবিল প্রয়োজন।
গণমাধ্যম বিষয়ক যোগাযোগ
ইউনিসেফ সম্পর্কে
প্রতিটি শিশুর অধিকার ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বিশ্বের ১৯০ টি দেশে কাজ করছে ইউনিসেফ। সকল বঞ্চিত শিশুদের পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়ে আমরা কাজ করি বিশ্বের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে।
আমাদের কাজ সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন: www.unicef.org.bd
ইউনিসেফের সাথে থাকুন: ফেসবুক এবং টুইটার