মৌসুমি বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকিতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুরা
শিক্ষাকেন্দ্রগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্যাম্প ও স্থানীয় কমিউনিটিগুলোতে ৬০ হাজারেরও বেশি শিশুর শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে
- পাওয়া যাবে:
- বাংলা
- English
কক্সবাজার, বাংলাদেশ/নিউইয়র্ক, ৯ জুলাই ২০১৯ – বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় কমিউনিটিতে বসবাসরত হাজার হাজার শিশু ও তাদের পরিবার গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকিতে পড়েছে। বিশেষ করে ক্যাম্পগুলোর পরিস্থিতি অনেক বেশি ভয়াবহ; যেখানে ৪ হাজারেরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে তাদের অনেককে এরইমধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি অ্যালেইন বালান্দি ডমস্যাম বলেছেন, "বৈরি আবহাওয়ার কারণে ক্যাম্প ও স্থানীয় কমিউনিটিগুলোর অবস্থা দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছে এবং সামনের দিনগুলোতে আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় এখানে মানবিক চাহিদাগুলো বাড়তে থাকবে। অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে আমরা পানি পরিশোধন ট্যাবলেট ও প্লাস্টিক শিটসহ শিশু ও পরিবারগুলোর কাছে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছি।"
বিভিন্ন প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ভারী বৃষ্টির পর ৭ বছর বয়সী একটি ছেলে পানিতে ডুবে গেছে এবং দুই শিশু আহত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ যেসব অবকাঠামো বা স্থাপনার ওপর শিশুরা নির্ভরশীল সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত ইউনিসেফের সহায়তাপ্রাপ্ত পাঁচটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র ব্যাপকভাবে এবং ৭৫০টির বেশি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে করে ৬০ হাজারেরও বেশি শিশুর শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ ব্যাহত হচ্ছে। ভারী বৃষ্টির কারণে অন্তত ১২টি শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একটি খেলার মাঠ সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে।
অন্তত ৪৭টি পানি বিতরণ কেন্দ্র ও নেটওয়ার্ক এবং ৬০০টিরও বেশি টয়লেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়ার (এডব্লিউডি) ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। আর এক্ষেত্রে বিশেষ করে শিশুরা অনেক বেশি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
ইউনিসেফের কক্সবাজার ফিল্ড অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বার্টা ট্রাভিয়েসো বলেন, "বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি তৈরির ঝুঁকিও রয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন, বিশেষ করে শিশুরা পানিবাহিত রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাদের সুরক্ষার জন্য শিশু ও পরিবারগুলো যাতে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।“
ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের শিক্ষাগ্রহণ বিঘ্নিত হওয়ার মাত্রা যাতে সর্বনিম্ন পর্যায়ে থাকে তা নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ ও তার সহযোগীরা পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা এবং শিক্ষা কেন্দ্রসহ ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিসেবার মেরামত কার্যক্রমও শুরু করে দিয়েছে। ক্যাম্পগুলোতে শিশু ও মায়েদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন পড়লে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল ও পুষ্টি টিম মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কক্সবাজারে অবস্থানরত ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশুর মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। শরণার্থী শিশু এবং স্থানীয় কমিউনিটিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ইউনিসেফের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ২০১৯ সালে সংস্থাটি ১৫ কোটি ২৫ লাখ ডলার অর্থসহায়তার আবেদন জানায়। বর্তমানে তহবিলে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৮৭ লাখ ডলার।
গণমাধ্যম বিষয়ক যোগাযোগ
ইউনিসেফ সম্পর্কে
প্রতিটি শিশুর অধিকার ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বিশ্বের ১৯০ টি দেশে কাজ করছে ইউনিসেফ। সকল বঞ্চিত শিশুদের পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়ে আমরা কাজ করি বিশ্বের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে।
আমাদের কাজ সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন: www.unicef.org.bd
ইউনিসেফের সাথে থাকুন: ফেসবুক এবং টুইটার