ঢাকায় দক্ষিণ এশীয় সংসদ সদস্যদের মুখোমুখি আমাদের শিশুরা
নতুন ও শক্তিশালী প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে এই প্ল্যার্টফর্মটি গঠিত হয়

- পাওয়া যাবে:
- বাংলা
- English
শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি নয়, দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদের জন্য আরো কিছু প্রয়োজন। এই অঞ্চলের ১০০ কোটিররও বেশি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে এমন নেতাদের উচিত শিশুদের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
এখানকার শিশুদের রয়েছে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত গর্বিত ইতিহাস, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, বিভিন্ন ভাষা। এছাড়াও প্রায় সকল ক্ষেত্রে রয়েছে একই অবস্থা অর্থাৎ দারিদ্র এবং মৌলিক সেবাসমূহ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অসমতা।
আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভূটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকাসহ আটটি দক্ষিণ এশীয় দেশে গণতন্ত্র অনেকটাই নতুন।
এই অঞ্চলের অনেক অংশই সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সহিংসতা এবং এমনকি যুদ্ধ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। এ সকল সমস্যা সত্ত্বেও, কিছু অঞ্চল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
এদের কেউ কেউ শিক্ষার কারনে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে এবং অন্যরা সুখের মাপকে কার্যকরীভাবে তাদের জনগণের প্রবৃদ্ধি পরিমাপ করে।
তাদের প্রত্যেকেরই একে অন্যের সাথে জরুরী ভিত্তিতে ভাগাভাগি করার মতো কিছু শিক্ষা আছে।
সুতরাং, ঢাকায় ইউনিসেফ কর্তৃক আয়োজিত শিশুদের জন্য দক্ষিণ এশীয় সংসদ সদস্যদের প্লাটফর্মে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ২৮ জন সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
শিশুদের বিকাশের জন্য প্রয়োজনের বিষয়টি মাথায় রেখে সরকার যেন বাজেট তৈরি করে এ বিষয়ে ঐক্যমত প্রকাশ করে আইন প্রণেতারা শিশুদের জন্য আরো বেশি বিনিয়োগে সম্মত হন।

“জাতীয় বাজেটে শিশুদের অধিকার সুরক্ষার জন্য সম্পদের বরাদ্দ এবং পর্যাপ্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করতে সংসদ সদস্যগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন,” - বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী
প্লাটফর্মটি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, শিশুদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি নিশ্চিত করার পরে, সরকারকে অবশ্যই এই সকল অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
মে ২-৩ সময়কালে সংসদ সদস্যগণ শিশু সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের সমস্যা এবং সাফল্যের বিষয় যেমন, শিশুদের দারিদ্র, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম, শিশুমৃত্যু, গুণগত শিক্ষার সুযোগ এবং পুষ্টিসহ আরো অনেক বিষয়ে নিজের মধ্যে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানের সমাপণী দিনে, সংসদ সদস্যগণ ৩০০ বাংলাদেশী শিশুর সাথে দেখা করে কথা বলেন। এসব শিশুরা সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্ন করেন এবং তাদের উন্নয়নের দাবী জানায়। হোটেল সোনারগাঁতে অনুষ্ঠিত সমাপণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া।
বিদ্যালয়ে যায় এমন শিশুদের সাথে নেতারা একমত হন যে, দক্ষিণ এশিয়ার যুব সম্প্রদায়ের জন্য উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এখনো অর্জিত হয়নি।
এই অঞ্চলটিতে পৃথিবীর চারভাগের একভাগ মানুষের বাস হলেও এ অঞ্চলের অংশীদারিত্ব বৈশ্বিক আয়ের মাত্র ৪ ভাগ - বলেন ইউনিসেফ-এর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক জিন গো।

তিনি বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সম্পদ অর্থাৎ মানব সম্পদের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের অভাব বিশেষ করে সমাজে বসবাসকারি শিশুদের জন্য বিনিয়োগের অভাব”।
তিনি আরো বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৩০ কোটিন শিশু বহুমাত্রিকভাবে দরিদ্র”।
নতুন ও শক্তিশালী প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে ঢাকা অনুষ্ঠানে এই প্ল্যার্টফর্মটি গঠিত হয়।
এক্ষেত্রে ইউনিসেফ-এর মাধ্যমে এরূপ একটি ডিজিটাল স্পেসের উন্মোচন করা হয়েছিল যাতে করে রাজনীতিবিদগণ শিশুদের বিভিন্ন ধরনের নীতি নির্ধারণী বিষয়গুলো নিয়ে একে অন্যের সাথে আলোচনা করতে পারেন।
গত বছরে কাঠমুন্ডুতে অংশগ্রহণের পরে, দ্বিতীয় বারের মতো প্ল্যাটফর্ম গঠনের উদ্দেশ্যে সংসদ সদস্যগণ ঢাকায় একত্রিত হয়েছিলেন।
শ্রীলংকা থেকে আসা সম্মানিত প্রতিনিধিগণ আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য তৃতীয় বৈঠকটি তার দেশে অয়োজন করার প্রস্তাব করেন।