এইডস নির্মূল
২০৩০ সাল নাগাদ লক্ষ্য অর্জনের জন্য চলছে কার্যক্রম
- পাওয়া যাবে:
- বাংলা
- English
চ্যালেঞ্জ
এইচআইভি এমন একটি ভাইরাস যেটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধ্বংস করে দেয় এবং জীবাণু সংক্রমণের বিরুদ্ধে মানবদেহকে প্রতিরোধহীন করে নিরাময়হীন অবস্থায় নিয়ে যায়, যা এইডস নামে পরিচিত।
বাংলাদেশে এইডস রোগীর সংখ্যা এখনও খুব বেশি নয়, মোট জনসংখ্যার ০.১ শতাংশ। তবে নতুন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির হার বাড়ছে।
যৌনকর্মী ও ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদকসেবীদের মধ্যেই এইচআইভির বিস্তার বেশি ঘটছে। অবশ্য গত পাঁচ বছরে গৃহবধূ ও গর্ভধারিণী নারীদের মধ্যেও এইচআইভির সংক্রমণ বেড়েছে।
নারীদের মধ্যে এইচআইভি ছড়িয়ে পড়াকে বৈশ্বিকভাবে মহামারীর অশনি সঙ্কেত হিসেবে দেখা হয়।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলায়ই এইডস আক্রান্তরা ছড়িয়ে আছে। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে এ বিষয়ে নজরদারির সুযোগ সীমিত।
লাখ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্য আর ইউরোপে অভিবাসী হয়েছে, তারা সেখানে প্রধানত কায়িক শ্রম দেন। অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে এইচআইভির সংক্রমণ বেশি এবং তা আরও বাড়ছে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।
অধিকাংশ এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে সিলেট, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায়। আক্রান্তদের বেশিরভাগই নারী-পুরুষ অভিবাসী শ্রমিক
বাংলাদেশে এইচআইভি ছড়ায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে। নারী-পুরুষ যৌনকর্মী ছাড়াও বিবাহিত দম্পতিদের মাধ্যমেও এ রোগের বিস্তার ঘটছে।
এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ২০০১ এর তুলনায় ২০১১ সালে দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু এ রোগের পরীক্ষা করানো ও চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে এখনও মানুষের মধ্যে সংকোচ রয়েছে, যদিও সরকার এসব সেবা বিনামূল্যে দিচ্ছে।
অপ্রতুল কর্মসূচির দরুন এইচআইভির বিস্তার বন্ধের প্রয়াস পিছিয়ে পড়ছে। ৭০ শতাংশের বেশি মানুষের কাছে এখনও পৌঁছানোই সম্ভব হয়নি। রোগটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণাও খুব কম।
এইডস মহামারির ঝুঁকি সত্ত্বেও এইচআইভি প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও সেবায় তহবিল কমে যাচ্ছে। ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের এইডস নির্মূল লক্ষ্য অর্জন ব্যাহত হতে বাধ্য।
সমাধান

মা-থেকে-শিশুতে সংক্রমণ ঠেকানো:
মা থেকে শিশুর দেহে এইচআইভি ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে ইউনিসেফ কারিগরি আর আর্থিক সহায়তা দেয়।
এইডস আক্রান্ত শিশুদের যত্ন:
এইচআইভি আক্রান্ত শিশু বা বাবা-মা এই অসুখে ভুগছে বা এতে মারা গেছেন - এমন শিশুদের ইউনিসেফ চিহ্নিত করে পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা ও জীবিকার জন্য অর্থের যোগান দেয়।
সবচেয়ে বেশী ঝুঁকিতে থাকা কিশোর-কিশোরীদের রক্ষা:
সুবিধাবঞ্চিত ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী যারা যৌনকর্মী ও ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদক সেবন করে তাদের এইচআইভি-এইডস সংক্রান্ত সেবা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে এইডস নির্মূলে কাজ করে ইউনিসেফ। এই কর্মসূচিতে সিলেট, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়, কারণ এ জায়গাগুলোতেই এইডস আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ।
এইচআইভি কর্মসূচির কারণেই ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে একটি মহামারির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। এতে ২০ হাজার মানুষের জীবন বেঁচেছে, এক লাখ ৪১ হাজার মানুষকে এইচআইভি সংক্রমণ থেকে বাঁচানো গেছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি বছর সর্বোচ্চ দেড় হাজারের মধ্যে সীমিত রাখা সম্ভব হয়েছে।
ইউনিসেফ এইচআইভি চিকিৎসায় প্রতিরোধমূলক পন্থায় এগোয় যা ভাইরাস বৃস্তৃতি রোধ করে এবং অন্যদের সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। ফলস্বরূপ এইচআইভি শরীরে নিয়েও দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন কাটানো সম্ভব হয়।
সেজন্য ইউনিসেফ রোগীদের বিনামূল্যে নিয়মিত ওষুধ ও যথাযথ সেবা সরবরাহ এবং ফলো আপ নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করে।
এইচআইভি শিক্ষা মূলধারায় অন্তর্ভুক্তি:
মাত্র ১১ শতাংশ কিশোর-কিশোরী এই রোগ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখে। ইউনিসেফের জীবন-দক্ষতা শিক্ষা প্রোগ্রামে এই ঘাতক ব্যধি সম্পর্কিত তথ্য সন্নিবেশ করা হয়েছে।
গবেষণা ও বিশেষায়িত জ্ঞান ব্যবস্থাপনা:
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় রোগাক্রান্ত নারী-শিশুদের তথ্য, উপাত্ত ও নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি এইচআইভি/এইডস নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়।
এই বিষয়ে আরও জানতে
এইচআইভি এ্যান্ড এইডস্ ডাটা হাব ফর বাংলাদেশ
জেন্ডার অ্যাসেসমেন্ট অব দ্য ন্যাশনাল এইচআইভি রেসপনস ইন বাংলাদেশ – এ কান্ট্রি রিপোর্ট ২০১৪
লার্নিং এইচআইভি হোয়াইল প্ল্যায়িং – টুলকিট ফর স্পোর্ট-বেসড এইচআইভি এ্যান্ড এইডস্ প্রিভেনশন এডুকেশন এমং এডোলেসেন্ট ইন বাংলাদেশ ২০১৫
ন্যাশনাল এইডস্ স্পেন্ডিং অ্যাসেসমেন্ট ২০১০-২০১৩
ফরর্থ ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ফর এইচআইভি এ্যান্ড এইডস্ রেসপনস ২০১৮-২০২২